একনজরে জমি জমার বেসিক নলেজ। (এ টু জেড)

জমি জমার বেসিক নলেজ।

★★জমি সংক্রান্ত ও দলিলে ব্যবহৃত গুরুত্বপুর্ণ  কিছু পরিভাষাঃ

(১)অনলাইনে খতিয়ান দেখার নিয়ম:

(২) drroffice.land.gov.bd

(৩) www.land.gov.bd

(৪) rsk.land.gov.bd

(৫) www.minland.gov

(৬) (ক) দিয়ারা: নদী থেকে উদ্ভূত চর ও জায়গার জন্য ভূমি জরিপ করার প্রক্রিয়াই হলো ‘দিয়ারা’ সার্ভে বা জরিপ। 

(খ) দিয়ারা : পলিমাটি দ্বারা গঠিত চর। দরিয়া থেকে দিয়ারা শব্দ এসেছে। চরের জমি জরিপ করার জন্য দিয়ারা জরিপ করা হয়।

(৭) দাগ নং কি? 

(ক) মৌজায় প্রত্যেক ভূমি মালিকের জমি আলাদাভাবে বা জমির শ্রেণী ভিত্তিক প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সিমানা খুঁটি বা আইল দিয়ে স্বরজমিনে আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়। মৌজা নক্সায় প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে ক্রমিক নম্বর দিয়ে জমি চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রদত্ত নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে।

(খ) দাগ নম্বর: একটি মৌজার বিভিন্ন মালিকের বা একই মালিকের বিভিন্ন শ্রেণীভুক্ত ভূমিকে নকশায় যে পৃথক পরিচিতি নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, তাকে বলে দাগ নম্বর।

 (গ) দাগ শব্দের অর্থ ভূমিখন্ড ,ভূমির ভাগ বা অংশ।নকশায় প্রদর্শিত প্রতিটি ভূমিখন্ডের সংখ্যাকে দাগ নম্বর বলে। দাগকে কোথাও কিত্তা বলা হয়।

(ঘ) দাগ” নাম্বার কাকে বলে?

যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে। 

★একেক দাগ নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি থাকতে পারে। মূলত, দাগ নাম্বার অনুসারে একটি মৌজার অধীনে ভূমি মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল দিয়ে সরেজমিন প্রর্দশন করা হয়।

(৮) (ক) মৌজা হচ্ছে রাজস্ব আদায়ের সর্বনিম্ন একক-এলাকা।

(খ) রাজস্ব নির্ধারণ এবং রাজস্ব আদায়ের জন্য এক ইউনিট জমির ভৌগোলিক অভিব্যক্তি ছিল মৌজা

(গ) মৌজা হলো জরিপের একটি ভৌগোলিক ইউনিট। একটি ইউনিয়নকে কয়েকটি মৌজায় বিভক্ত করে এ ভৌগোলিক ইউনিট করা হয়।

(৯) ম্যাপ বা নকশা: নকশা হলো কোনো মৌজাভুক্ত ভূমির বাস্তব চিত্র বা ভূ-চিত্র।

(১০) জেএল নং : উপজেলার অন্তর্গত মৌজাগুলোর পরিচিতিমূলক ক্রমিক নম্বরকে জেএল নং বা জুরিসডিকশন লিস্ট নম্বর বলে। মৌজার উত্তর-পশ্চিম কোণ থেকে শুরু করে পূর্ব-দক্ষিণ কোণে গিয়ে এ নম্বর দেওয়া শেষ করা হয়।

(১১) খতিয়ান: খতিয়ান হলো দখলিস্বত্বের প্রামাণ্য দলিল। এক বা একাধিক দাগের সম্পূর্ণ বা আংশিক ভূমি নিয়ে এক বা একাধিক ব্যক্তির নামে সরকার বা রাজস্ব কর্মকর্তা কর্তৃক যে ভূমিস্বত্ব প্রস্তুত করা হয়, তাকে খতিয়ান বলে। প্রতি খতিয়ানের একটি পৃথক পরিচিতি নম্বর থাকে। খতিয়ানকে ‘রেকর্ড অব রাইটস’ বা ‘স্বত্বলিপি’ বলা হয়। খতিয়ান হচ্ছে নিখুঁত মালিকানা স্বত্ব ও দখলিস্বত্বের প্রামাণ্য দলিল। খতিয়ানে মৌজা নম্বর, জেএল নম্বর, স্বত্বের বিবরণ, মালিকের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা থাকে। খতিয়ানের অপর পৃষ্ঠায় দাগ নম্বর, প্রত্যেক দাগের উত্তর সীমা (উত্তর দাগ), ভূমির শ্রেণী, দখলকারের নাম, ভূমির পরিমাণ, হিস্যা, হিস্যামতে পরিমাণ লেখা থাকে। উপযুক্ত আদালত কর্তৃক ভুল প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত খতিয়ান নির্ভুল হিসেবে গণ্য হতে থাকে।

★খতিয়ানগুলি ১,২,৩,৪ ইত্যাদি ক্রমিক সংখ্যা দ্বারা সাজানো হয়ে থাকে। প্রত্যেক খতিয়ানের একটি সংখ্যা রয়েছে। ইহাদেরকে খতিয়ান নম্বর বলা হয়। 

★প্রত্যেক মৌজার ১নং খতিয়ানটিকে ‘খাস-খতিয়ান’ বলা হয়।বাংলাদেশ সরকারের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংষ্কার মন্ত্রণালয়ের স্বত্বাধীন সমূদয় ভূমি যথা-হাট বাজার, খাল-বিল, রাস্তা-ঘাট এবং অন্যান্য কৃষি ও অকৃষি ভূমি উক্ত ১ নং খতিয়ানের অন্তভূর্ক্ত হয়ে থাকে এবং সরকারের পক্ষে ‘কালেক্টর’ হিসাবে উক্ত ১ নং খতিয়ানে লিখনভূক্ত হয়ে থাকে।

খতিয়ানের তালিকায় নিম্নলিখিত বিষয়াদি লেখা থাকে, যেমন-

খতিয়ানের ক্রমিক নম্বর

মালিক বা মালিকগণের নাম ও তাদের পিতা কিংবা স্বামীর নাম এবং মালিকের পূর্ণ বিবরণ।

মালিক বা মালিকগণের অংশ।

দাগ নম্বর।

দাগের ভূমির শ্রেণী

দাগের ভূমির পরিমান

দাগের মধ্যে অত্র খতিয়ানের হিস্যা

দাগের মধ্যে অত্র খতিয়ানের জমির পরিমান

রাজস্ব

মন্তব্য

জেলার নাম

থানার নাম

মৌজা বা উপজেলার নাম

জে.এল নং

তৌজি নং ইত্যাদি।

(১২) (ক) পর্চা: জরিপ চলাকালে বুঝারত স্তরে ভূমি মালিককে প্রস্তুতকৃত খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি দেওয়া হয়, তাকে পর্চা বলে। পর্চা জরিপ কর্মচারী কর্তৃক অনুস্বাক্ষরিত হওয়া উচিত।

(খ) পর্চা কাকে বলে ? ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত প্রস্তত করার পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি ভুমি মালিকদের প্রদান করা হয় তাকে “মাঠ পর্চা” বলে। এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/রাজস্ব কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে তা শোনানির পর চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে“পর্চা” বলে।

(১৩) তফসিল: কোনো জমি যে মৌজায় অবস্থিত সে মৌজার নাম, জেএল নম্বর, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, জমির শ্রেণী, পরিমাণ, জমির চৌহদ্দি বর্ণনা ইত্যাদি পরিচিতি সংবলিত বিবরণকে ওই জমির তফসিল বলে।

(১৪) দাখিলা: (ক) ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের বিপরীতে প্রদত্ত রসিদকে বলে দাখিলা বা আর আর (রেন্ট রিসিট) দাখিলা ভূমি মালিকানা প্রমাণের প্রাথমিক দলিল।

(খ) দাখিলা: সরকার বা সম্পত্তির মালিককে খাজনা দিলে যে রশিদ প্রদান করা হয় তা দাখিলা বা খাজনার রশিদ নামে পরিচিত। দাখিলা কোনো স্বত্বের দলিল নয়, তবে তা দখল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ বহন করে।

(১৫) ওয়ারিশ কাকে বলে? 

ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী। ধর্মীয় বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরণ করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে।

(১৬) দলিল কাকে বলে? 

যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন সাধারন ভাবে তাকে দলিল বলে।

(১৭) ফারায়েজ কাকে বলে?

ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।

(১৮)

★১২ ইঞ্চি = ১ ফুট

    ৩ ফুট= ১ গজ

   ১৮ ইঞ্চি= ১ হাত

 ভূমি যে কোন সাইজের হোক কেন ভূমির দের্ঘ্য ও প্রস্থে যদি ৪৮৪০ বর্গগজ হয় তাহলে এটা ১.০০ একর (এক একর) হবে। যেমনঃ ভূমির দৈর্ঘ্য ২২০ গজ এবং প্রস্থ ২২ গজ সুতরাং ২২০ গজ×২২ গজ= ৪৮৪০ বর্গগজ।

★এক একরের এক শত ভাগের এক ভাগকে বলা হয় এক শতাংশ জমি।

★সরকারিভাবে ভূমির পরিমাপ একর, শতক পদ্ধতিতে করা হয়।

(১৯) এজমালি/ইজমালি = যৌথ, সংযুক্ত, বহুজনের একত্রে।যেমন: এজমালি সম্পত্তি বলতে যৌথ মালিকাধীন সম্পত্তিকে বোঝায়।

(২০) (ক )খারিজ = সাধারণ অর্থে বাতিল করা হয়েছে এমন বোঝায়। ভূমি আইনে একজনের নাম থেকে অন্যজনের নামে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে নেওয়াকে বোঝায়।

(খ) জমা খারিজ: জমা খারিজ অর্থ যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করা। প্রজার কোন জোতের কোন জমি হস্তান্তর বা বন্টনের কারনে মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমি নিয়ে নুতন জোত বা খতিয়ান খোলাকে জমা খারিজ বলা হয়।

(২১) দখলনামা: দখল হস্তান্তরের সনদপত্র।সার্টিফিকেট জারীর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি কোনো সম্পত্তি নিলাম খরিদ করে নিলে সরকার পক্ষ সম্পত্তির ক্রেতাকে দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর যে সনদপত্র প্রদান করেন তাকে দখলনামা বলে।সরকারের লোক সরেজমিনে গিয়ে ঢোল পিটিয়ে, লাল নিশান উড়ায়ে বা বাঁশ গেড়ে দখল প্রদান করেন। কোনো ডিক্রিজারির ক্ষেত্রে কোনো সম্পত্তি নিলাম বিক্রয় হলে আদালত ওই সম্পত্তির ক্রেতাকে দখল বুঝিয়ে দিয়ে যে সার্টিফিকেট প্রদান করেন তাকেও দখলনামা বলা হয়। যিনি সরকার অথবা আদালতের নিকট থেকে কোনো সম্পত্তির দখলনামা প্রাপ্ত হন, ধরে নিতে হবে যে, দখলনামা প্রাপ্ত ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে দখল আছে।

(২২) বায়নামা: ১৯০৮ সালের দেওয়ানি কার্যবিধির ২১ আদেশের ৯৪ নিয়ম অনুসারে কোনো স্থাবর সম্পত্তির নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হলে আদালত নিলাম ক্রেতাকে নিলামকৃত সম্পত্তির বিবরণ সংবলিত যে সনদ দেন তা বায়নামা নামে পরিচিত। বায়নামায় নিলাম ক্রেতার নামসহ অন্যান্য তথ্যাবলি লিপিবদ্ধ থাকে। কোনো নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হলে ক্রেতার অনুকূলে অবশ্যই বায়নামা দিতে হবে। যে তারিখে নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হয় বায়নামায় সে তারিখ উল্লেখ করতে হয়।

(২৩) এওয়াজ (By virtue of exchange) : সমপরিমান কোন ভূমি বা জিনিসের বদলে সমপরিমান কোন ভূমি বা জিনিস প্রাপ্ত হলে তাকে এওয়াজ সূত্রে প্রাপ্ত বলা হয়। ইহাকে বদল সূত্র ও বলে।

(২৪) অছিয়তনামা: যদি কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পূর্বে তাহার ওয়ারিশ বা আত্মীয়-স্বজনকে তদীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বাটোয়ারা সম্পর্কে দলীল মূলে কোন নির্দেশ দিয়ে যান, তবে তাকে অছিয়তনামা বলে। হিন্দু ধর্মে ইহাকে উইল বলে।

(২৫) চৌহদ্দি (Boundary): সীমানা। কোন নির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির চারপাশে যা কিছু রয়েছে (জমিজমা, পুকুর,স্থাপনা,মালিকের নাম এবং সম্পত্তির বিবরণসহ) তাই চৌহদ্দি।

(২৬) (ক) নামজারি (Mutation): জমির মালিকানা পরিবর্তিত হলে পুরাতন মালিকের স্থলে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াকেই নামজারি বলে।

(খ) নামজারী: ভূম্যধিকারীর সরকারের সাবেক নামের পরিবর্তে খরিদ্দার অথবা ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম রেজিষ্ট্রী করাকে নামজারী বলে।

(২৭) নক্সা (Map): ম্যাপ বা নকশা বলতে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ র্নিণয় করে ভূমির অবিকল প্রতিচ্ছবিকে বুঝায়।

(২৮) ভূমি: সাধারণভাবে সকল আবাদী ও অনাবাদী ভূমি এবং নদ-নদী, খাল-বিল, নালা, পুকুর, ডোবা, বাড়ীঘর যাহা ভূমির সঙ্গে স্থায়ীভাবে যুক্ত হয়েছে ইত্যাদি ভূমি বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু সাগর বা উপ-সাগরকে ভূমি বলে গণ্য করা হয়না।

(২৯) হাল খতিয়ান নম্বর: কোন এলাকায় সর্বশেষ জরিপে খতিয়ানের রেকর্ড প্রস্তুত হওয়ার পর সরকার কর্তৃক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ঘোষিত হয়ে বর্তমানে চালু আছে, এইরূপ খতিয়ানসমূহকে ‘হাল-খতিয়ান’ বলা হয়।

(৩০) সাবেক খতিয়ান নম্বর: যে সকল খতিয়ান হাল খতিয়ান চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত চালু ছিল এবং বর্তমানে চালু নেই এইরূপ খতিয়ানসমূহে ‘সাবেক খতিয়ান’ বলা হয়। এই সাবেক খতিয়ানগুলি ভূমির ধারাবাহিক পরিচিতির জন্য প্রয়োজন। ইহা ছাড়া, সাবেক খতিয়ানগুলি হাল-খতিয়ান হিসেবে চালু থাকা কালে সম্পাদিত সকল দলিল, মামলা-মোকদ্দমার রায়ে, ডিক্রিতে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে এই খতিয়ানগুলি লেখা হয়েছিল। হাল-খতিয়ান চালু হওয়ার পূর্বেকার সম্পাদিত দলিল-দস্তাবেজ ও রায়ে উল্লেখিত খতিয়ানগুলি, যাহা সাবেক খতিয়ানে পরিণত হয়েছে, তাহা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।সংশ্লিষ্ট দলিল-দস্তাবেজে সাবেক খতিয়ান নং বহাল থাকায় এইগুলির গুরুত্ব বিশেষভাবেই অপরিসীম।

(৩১) নামজারি” কাকে বলে?

ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারী বলা হয়। কিন্তু নিজ নাম খতিয়ানভূক্ত করার পক্রিয়াটি পদ্ধতিগত। পদ্ধতি জানা না থাকলে আপনি জমির দখলকার বা মালিক হওয়া স্বত্বে সরকারি রেকর্ডে আপনার নাম নেই। ফলে সৃষ্টি ভূমি বিরোধ এবং মামলা-হামলা সহ নানান জটিলতা। তাই, আপনার জমির নামজারি খতিয়ান করে নিন সর্বাগ্রে। 

(৩২) তফসিল” কাকে বলে?

জমির পরিচয় বহন করে এমন বিস্তারিত বিবরণকে “তফসিল” বলে। তফসিলে, মৌজার নাম, নাম্বার, খতিয়ার নাম্বার, দাগ নাম্বার, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমাণ সহ ইত্যাদি তথ্য সন্নিবেশ থাকে।

(৩৪) আমিন” কাকে বলে?

ভূমি জরিপের মাধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তত ও ভূমি জরিপ কাজে নিজুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলে।

(৩৫) (ক) খাজনা” ককে বলে?

সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে প্রজার নিকট থেকে ভূমি ব্যবহারের জন্য যে কর আদায় করে তাকে খাজনা বলে।

(খ) ভূমি উন্নয়ন কর/খাজনা কি?

কোনো জমি ভোগ দখলের সুবিধা গ্রহণের জন্য সরকারকে প্রতি শতাংশ জমির জন্য প্রতি বছর যে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রদান করতে হয় তাকেই ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা বলে।

★★★ খাজনা সংক্রান্ত অধিকার:

→খাজনা প্রদান করে দাখিলা গ্রহণের অধিকার ৷

→খাজনা প্রদান করে দাখিলার মাধ্যমে জমির মালিকানা প্রমাণের অধিকার ৷

→যদি কোনো ব্যক্তি খাজনা সংক্রান্ত ব্যাপারের কোন আদেশে অসন্তুষ্ট হন সেক্ষেত্রে আপিলের অধিকার ৷

(১৯৭৬ সালের ভুমি উন্নয়ন কর বিধিমালার ৭ বিধি)

→রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা হওয়ার আগে নোটিশ পাবার অধিকার (যেমন ডাকযোগে/প্রকাশ্য স্থানে লটকানোর মাধ্যমে/সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির উপর টাঙ্গানোর মাধ্যমে। (১৯৭৬ সালের ভুমি উন্নয়ন কর বিধিমালার ৬ বিধি)

♦♦ কোন কোন ক্ষেত্রে বিনা খাজনাতে ভোগ দখলের অধিকার:

(১৯৭৬ সালের ভুমি উন্নয়ন কর বিধিমালা)

(ক) ২৫ বিঘার কম জমি থাকলে ৷

(খ) ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী পর্যায়ে নিজে শারীরিক পরিশ্রম করে হাঁস-মুরগীর খামার/ডেইরী ফার্ম হিসাবে কোন জমি ব্যবহার করলে ৷

(গ) ৫টির কম হস্তচালিত তাঁত যদি কোন জমির উপর অবস্থিত হয় এবং তাঁতগুলি যদি জমির মালিক নিজে শারীরিক পরিশ্রম করে চালায় ৷

(ঘ) যদি কোনো জমি প্রধানত প্রার্থনার স্থান অথবা ধর্মীয় উপসনালয় অথবা সর্ব সাধারণের কবরস্থান/শশ্মান ঘাট হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে ৷

♦ ♦ লঙ্ঘন:

→খাজনা প্রদানের পর দাখিলা/রশিদ প্রদান না করা ৷

→খাজনা প্রদান করে দাখিলার মাধ্যমে জমির মালিকানা প্রমাণে বাধা দেওয়া ৷

→২৫ বিঘার কম জমি থাকা স্বত্বেও খাজনা দাবী করা ৷

→খাজনা মওকুফের জন্য দরখাস্ত গ্রহণ না করা ।

→রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা হওয়ার আগে নোটিশ প্রদান করা ৷

♦♦ সংশ্লিষ্ট প্রতিকার:

→আপিলের মাধ্যমে ৷

♦♦ প্রতিকারের জন্য কোথায় যেতে হবে?

→খাজনা প্রদান সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে সমস্যা সৃষ্টি হলে থানা রাজস্ব কর্মকর্তা তথা সহকারী ভুমি কমিশনারের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে ৷

(১৯৭৬ সালের ভুমি উন্নয়ন কর বিধিমালার ৭ বিধি)

♦♦ আপিলের সুযোগ আছে কি?

→আছে ৷

খাজনা বা ভুমি উন্নয়ন কর সংক্রান্ত কোনো প্রাথমিক দাবী সম্পর্কে কোনো ব্যক্তির বা ভুমি মালিকের কোনো আপত্তি থাকলে আপত্তি দাখিল করা যাবে ৷ (১৯৭৬ সালের ভুমি উন্নয়ন কর বিধিমালার ৭ বিধি)

কোথায় আপত্তি দাখিল করতে হবে?

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অথবা জেলা প্রশাসক (ডি.সি.) এর নিকট ৷

♦♦ কতদিনের মধ্যে?

→১৫ দিনের মধ্যে ৷

জেলা প্রশাসকের আদেশে কোনো ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হলে সেই আদেশের বিরূদ্ধেও আপিল করা যাবে ৷

আপিলের জন্য কোথায় যেতে হবে?

বিভাগীয় কমিশনারের নিকট

♦♦ কতদিনের মধ্যে?

→৪৫ দিনের মধ্যে

বিভাগীয় কমিশনারের আদেশে কোন ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হলে সেই আদেশের বিরূদ্ধেও আপিল করা যাবে ৷

♦♦ আপিলের জন্য কোথায় যেতে হবে?

→ভুমি আপিল বোর্ডের নিকট ৷

♦♦ কতদিনের মধ্যে?

→১৫ দিনের মধ্যে

(৩৬) কবুলিয়ত” কাকে বলে?

সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।

(৩৭ ) বায়া দলিল: ‘বায়া দলিল’ অর্থ সংশ্লিষ্ট ভূমির পূর্ব মালিকের দলিল। কোন ভূমি বা ভূমি খণ্ড যে যে দলিল মুলে যতবার হস্তান্তর হয়েছে, তার প্রত্যেকটি দলিলই এক একটি বায়া দলিল। বায়া দলিল ভূমির মালিকানার ইতিহাস ও হস্তান্তরের ধারাবাহিকতা প্রকাশ করে। তাই জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জমির বায়া দলিল ভালভাবে যাচাই করতে হয়।

(৩৮) কায়েমী স্বত্ব ( permanent interest): চিরস্থায়ী ভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া ভূমিকে কায়েমী স্বত্ব বলে।

(৩৯) হারাহারি: মালিকানার পরিমান অর্থাৎ একাধিক ক্রেতা বা বিক্রেতার ক্ষেত্রে কে কতটুকু সম্পত্তি ক্রয় বা বিক্রয় করল, তার পরিমান।

(৪০) লায়েক পতিত ভূমি: আরবি ‘লায়েক’ অর্থ যোগ্য বা উপযুক্ত। লায়েক পতিত ভূমি বলতে আবাদযোগ্য পতিত ভূমিকে বুঝায়।

(৪১) হাসিল: গবাদি পশুর হাটে ক্রেতা বা বিক্রোতার নিকট থেকে আদায়কৃত টোলকে হাসিল বলা হয়।

(৪২) সালামি: কোন হস্তান্তরের স্বীকৃতিস্বরুপ প্রিমিয়াম বা স্থায়ী ইজারা প্রদানের নিমিত্ত আর্থিক উপটৌকন।

(৪৩) কোলা জমি: বসতবাড়ী সংলগ্ন নাল জমিকে কোলা জমি বলে।

(৪৪) নাল জমি: সাধারনত নিচুঁ সমতল কৃষি জমি জমিকে নাল জমি বলে।

(৪৫) ভিটি জমি: সমভূমি হতে সামান্য উচু ভূমিকে ভিটি বলে।

(৪৬) জলমহাল: বিল, হাওর, বাওর, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়।

(৪৭) কবুলিয়ত (Counter part of lease): মালিকের বরাবরে প্রাপ্তি স্বীকারোক্তিমুলক দলিলকে কবুলিয়ত বলে। কবুলিয়ত দলিলে জমি ভোগ দখল করার জন্য শর্ত ও প্রজা কর্তৃক খাজনা দেয়ার প্রতিশ্রুতি লেখা থাকে।

(৪৮) মোতোওয়াল্লী (Manager): যিনি ওয়াকফফ সম্পত্তি তত্বাবধান বা পরিচালনা করেন, কাকে মোতোওয়াল্লী বলে। ওয়াকিফ নিজেও মোতোওয়াল্লী হতে পারেন। মোতোওয়াল্লী ওয়াকফ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উন্নতি কল্পে ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতিক্রমে ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন।

(৪৯) ওয়াকফ সম্পত্তি (Wakf property): কোন মুসলমান তার সম্পত্তি ধর্মীয় বা সমাজ কল্যাণমুলক কাজের জন্য দান করতে পারে। ধর্মীয় ও সমাজ কল্যাণমুলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন সম্পত্তি দলিলের মাধ্যমে উৎসর্গ করলে সেই সম্পত্তিকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে। যিনি সম্পত্তি উৎসর্গ করেন তাকে ওয়াকিফ বলে। ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় না।

(৫০) পরিত্যক্ত সম্পত্তি (Abandoned Property): ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকালে বা স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে যে সকল পাকিস্তানি নাগরিক স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করে চলে যায়, বাংলাদেশে ফেলে যাওয়া তাদের সম্পত্তিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি বলে।

(৫১) আইল: প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা করার জন্য সীমানানির্দেশক উঁচু ধরনের চিহ্নকে আইল বলা হয়। জমিতে পানি আটকানোর জন্য নির্মিত অনুচ্চ বাঁধকেও আইল বলা হয়।

(৫২) বাওড়: প্রাকৃতিক বা অন্য কারনে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে পুর্বের গতিপথের স্রোত প্রাকৃতিক কারণে বন্ধ হয়ে যে বিস্তীর্ণ জলাভূমি সৃষ্টি করে তাকে বাওড় বলে।

(৫৩) হাওড়: প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট বিস্তীর্ণ জলমগ্ন নিম্ন জলাভূমি হাওড় নামে পরিচিত। হাওড় এলাকা বিলের চেয়ে বড়।

(৫৪) বিল: বিস্তীর্ণ আবদ্ধ স্বাদু পানির জলাভূমি, যেখানে অতিরিক্ত পানি এসে জমা হয়।

(৫৫) ঝিল: লম্বাকৃতি জলাভূমি, ছোট আকারের বিল।

(৫৬) ছড়া (Downward strip land): পাহাড় বা টিলার যে সকল এলাকা সমতল ভূমির দিকে ঢালু হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তাকে ছড়া বা ছড়ি বলা হয়।

(৫৭) ভিটি জমি: বাড়ীঘর করার যোগ্য এমন উঁচু ভূমিকে ভিটি জমি বলে।

(৫৮) নকশা: কাগজে অংকিত ভূমির প্রতিচ্ছবিকে নকশা বলে।

(৫৯) ভূমি অধিগ্রহণ: জনস্বার্থে কোন উন্নয়নমুলক কাজের জন্য স্থাবর সম্পত্তির প্রয়োজনে কালেক্টরেট বা জেলা প্রশাসক জনসাধারণের নিকট হতে বাধ্যতামূলকভাবে যে ভূমি গ্রহন করে, তাকে ভূমি অধিগ্রহণ বলে।

(৬০) এজমালী সম্পত্তি: কোন প্লট বা জমি খন্ড একাধিক শরিক একত্রে ভোগ-দখলে রাখলে তাকে এজমালী সম্পত্তি বলে।

(৬১) বর্গা চাষী: বর্গা বলতে ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের ভাগ বুঝায়। কোন ব্যক্তি ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের কোন নির্দিষ্ট অংশ ভূমি মালিককে দেয়ার শর্তে যদি চাষাবাদ করেন, তবে উক্ত চাষীকে বর্গাচাষী বলা হবে।

(৬২) দলিল বলতে যে কোন চুক্তির লিখিত ও আইনগ্রাহ্য রূপ বোঝায়। তবে বাংলা ভাষায় সম্পত্তি, বিশেষ করে জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয়, বণ্টন এবং হস্তান্তরের জন্য ‘দলিল’ শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দলিলের পাঁচটি মৌলিক তথ্য হলো: (ক) সম্পত্তির বর্ণনা, (খ) দাতার পরিচয়, (গ) গ্রহিতার পরিচয়, (ঘ) সাক্ষীদের পরিচয় এবং (ঙ) দলিল সম্পাদনের তারিখ। দলিল সম্পাদনের পর সরকারের মনোনীত কর্মকর্তা কর্তৃক নিবন্ধনের বিধান রয়েছে। এতে দলিলের আইনী বৈধতা দৃঢ়তর হয়। দলিল সম্পাদনের জন্য সরকারকে রাজস্ব দিতে হয়।

জমি-জমা ক্রয়-বিক্রয় এবং হস্তান্তরের জন্য দলিল শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হলেও যে কোনও চুক্তির ক্ষেত্রে দলিল শব্দটি প্রয়োগ করা যায়। বিয়ের কাবিননামা, যুদ্ধের আত্মসমর্পণ চুক্তি, ক্রয়ের জন্য লিখিত কার্যাদেশ, আদালতের আদেশনামা ইত্যাদিও দলিল পর্যায়ভুক্ত।

(৬৩) তহশিলদার: সরকার বা জমিদারের অধনস্ত রাজস্ব বা খাজনা আদায়কারীকে তহশিলদার বলা হত। বর্তমানে তহশিলদার পদ বিলুপ্ত করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়কারীকে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বলা হয়।

(৬৪) সাফ কবলা (Saf Kabala) দলিলে: জমি, ফ্লাট বা প্লট ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের দলিলকে সাফ কবালা দলিল বলে।

(৬৫) এসি (ল্যান্ড) বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা এবং তিনি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট-এ বিভিন্ন অপরাধীকে শাস্তি দেন।তাই তার অপরাধ করা বা প্রশ্রয় দেয়া মেনে নেয়া যায় না।তবে অনেক ক্ষেত্রে তার নাম বিক্রি করে অসৎ তহশিলদার,সার্ভেয়ার বা কানুনগো যে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে সেটাও মনে রাখতে হবে।

(৬৬) কেন ভূমি উন্নয়ন কর সময়মত পরিশোধ করবেন?

ভূমি উন্নয়ন কর প্রতি বছর পরিশোধ করতেহয়। পর পর দুই বছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলেজমির মালিকের বিরুদ্ধে (পি.ডি.আর এ্যাক্টের আওতায়) সার্টিফিকেট কেস হবে। এই কেসে হারলে অর্থাৎ ভূমি উন্নয়ন কর না দিতে পারলে জমির অধিকার হারাবেন। ভূমি উন্নয়ন কর বাকী পড়লে জমি নিলামে তোলা হয়।

(৬৭) বন্টনমানা দলিল: শরিকগণ মধ্যে সম্পত্তি ক্রমে নিজ নিজ ছাহাম প্রাপ্ত হয়ে উক্ত ছাহামের বাবদ যে দলিল করতে হয় তাকে বন্টননামা দলিল বলে। একই সম্পত্তিতে মালিক একই বংশের লোককে সাধারণত শরিক বলা হয়। শরিক দুই প্রকারের, যথা- উত্তরাধিকার সূত্রে শরিক ও কোন শরিক হতে খরিদ সূত্রে শরিক। ইংরেজীতে বলা হয় কো-শেয়ারার বাই ইনহেরিটেন্স এন্ড কো-শেয়ারার বাই পারচেজ। বন্টননামা দলিল করবার সময় সকল শরিকগণ দলিলে পক্ষভুক্ত থেকে ও দস্তখত করে বন্টননামা দলিল করতে হবে। কোন একজন শরিক বাদ থাকলে বন্টননামা শুদ্ধ হবেনা। বন্টননামা দলিল রেজিষ্টারী করতে হবে কিন্তু ঘরোয়াভাবে বন্টন করে সকল পক্ষগণ যদি বন্টননামা দলিলে দস্তখত করে থাকেন তা হলেও বন্টননামা কার্যকরী হতে পারে। যদি শরিকগণ আপোষ মতে বন্টন করতে রাজী না হন তাহলে যে কোন শরিক বন্টনের জন্য আদালতে নালিশ করতে পারেন।

(৬৮)২ কানি ১০ গন্ডা (৪০ শতকের কানিতে) = ১ একর। অর্থাৎ,১০০ শতক= ১ একর।

(৬৯।১ একর = ১০০ শতক।

       ১ একর = ৪,৮৪০ বর্গগজ 

       ১ শতাংশ = ৪৮.৪০ বর্গগজ 

       ১ শতক = ১ গন্ডা বা ৪৩২.৬ বর্গফুট

       ১ শতাংশ = ১০০ অযুতাংশ

★টিকা

একশত শতাংশ বা এক হাজার সহস্রাংশ বা দশ হাজার অযুতাংশ= ১.০০ (এক) একর। দশমিক বিন্দুর (.) পরে চার অঙ্ক হলে অযুতাংশ পড়তে হবে।

(৭০)১ গজ = ৩ ফুট

       ১ ফুট = ১২ ইঞ্চি

       ১ হাত (প্রামাণ সাইজ) = ১৮ ইঞ্চি ফুট

(৭১)১ হেক্টর = ২.৪৭ একর (প্রায়)

(৭২) ভূমির পরিমাপ বা জমির মাপ:

ভূমির পরিমাপ বা জমির মাপ-ঝোঁক মানেই এর ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা। ভূমি বা জমির ক্ষেত্রফল নির্ণয়ে জ্যামিতির সাধারণ জ্ঞান জানা আবশ্যক। বিশেষ করে বিভিন্ন ভুজ (যেমন- ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, পঞ্চভুজ, ষড়ভুজ এবং বহুভুজ) এর ক্ষেত্রফল বের করার একাধিক সূত্র আত্মস্থ করা দরকার। কারণ জমি সব সময় চুতর্ভুজ আকারের হবে এমন ধারণা থেকে বিরত থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
error: Content is protected !!