ইলমের বড়াইকারীরা প্রকৃতপক্ষে মূর্খই এবং জাহান্নামের ইন্ধন!!
লেখক: ড. আহমদ আলী
ইলমের অহমিকা ও বড়াই একটি অতীব ঘৃণ্য চরিত্র।
আমাদের অনেকেই কথার্বাতায় ও বেশভূষায় নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ আলিম ও ফকীহ হিসেবে জাহির করতে পছন্দ করেন এবং অন্য আলিমদের জ্ঞানের স্বীকৃতি দিতে রাজি হন না; বরং তাদেরকে তুচ্ছ করে উপহাস করেন।
উপরন্তু, তারা প্রত্যেক বিষয়ে নিজের চিন্তা ও রায়ের ওপর এতো বেশি আস্থাশীল হন ও তৃপ্তি বোধ করেন যে, তারা নিজ নিজ চিন্তা ও রায়কেই একমাত্র সঠিক ও চূড়ান্ত মনে করেন এবং অন্যদের রায় ও চিন্তাগুলোকে বাতিল ও মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেন।
এরূপ অহমিকা ও আত্মতুষ্টি একদিকে একজন আলিমকে চরম অহঙ্কারী ও অসহিষ্ণুতে পরিণত করে, অপরদিকে উম্মতের মধ্যে বিভেদ-বিভাজন বৃদ্ধি করে। এর পরিণতিও ভয়াবহ।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
.. ثم يظهر قوم يقرؤون القرآن يقولون من أقرأ منا من أفقه منا من أعلم منا ثم قال لأصحابه هل في أولئك من خير قالوا: لاَ ، قال أولئك منكم من هذه الأمة فأولئك هم وقود النار
“,.. অতঃপর এমন কিছু লোকদের উদ্ভব ঘটবে, যারা কুরআন পড়বে, কুরআনের জ্ঞান লাভ করবে।
তারা এভাবে দম্ভোক্তি করবে যে, আমাদের চেয়ে বড় কারী কে আছে? আমাদের চেয়ে বড় ফকীহ আর কে আছে? কে আছে আমাদের চেয়ে বড় আলিম?!
রাসূল সা. সাহাবীগণ থেকে জিজ্ঞেস করলেন, এ জাতীয় লোকদের মধ্যে কি কোনো কল্যাণ নিহিত রয়েছে?
তাঁরা জবাব দিলেন, না, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কারা এসব লোক?
তিনি জবাব দিলেন, ‘‘তারা এ উম্মতের মধ্যে তোমাদের মাঝ থেকেই জন্ম নেবে। এসব লোক হলো জাহান্নামের ইন্ধন।” (আলমুজামুল আওসাত, মুসনাদু আবী ইয়া‘লা ও মুসনাদুল বাযযার। হাদীসটি সূত্রগত দিক থেকে দুর্বল; তবে বিভিন্ন সূত্রে বণির্ত হয়ে এসেছে। )
সাইয়িদুনা ‘উমার (রা.) বলেন,
إن أخوف ما أخاف عليكم إعجاب المرء برأيه ، ومن قال : أنا عالم فهو جاهل
‘‘আমি তোমাদের বেলায় যে বিষয়ের ব্যাপারে সর্বাপেক্ষা আশঙ্কা বোধ করছি তা হলো: ব্যক্তির নিজের চিন্তা ও রায়ের ওপর আত্মতুষ্টি। (মনে রেখো,) যে ব্যক্তি নিজেকে আলিম বলে দাবি করবে, সে প্রকৃতই জাহিল (মূর্খ)।” (ইবনু হাজর, আল-মাতালিবুল ‘আলিয়াহ, হা. নং: ৩০৭৯)