ইফরাতও নয়, তাফরীতও নয়; ইতিদালই কাম্য!!
লেখক: ড. আহমদ আলী
আল্লাহ প্রদত্ত মর্যাদার চেয়ে রাসূল সা.-এর শান হ্রাস বা তুচ্ছ করে বলা (তাফরীত) যেমন গুরুতর অপরাধ, তেমনি তাঁর শান বাড়িয়ে বলা (ইফরাত)ও চরম অপরাধ। কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসে তাঁর অসংখ্য মর্যাদার কথা উল্লেখ রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব হলো, তাঁর সঠিক মর্যাদা নিরূপণ ও তাঁকে যথাযথ সম্মান ও ভক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এসব বর্ণনার ওপরই একান্ত নির্ভর করা। তা যেমন হ্রাস করে কিংবা বিকৃত করে বলা উচিত নয়, তেমনি কিছু বাড়িয়ে অতিরঞ্জিত করে বলাও উচিত নয়। প্রথমটি কুফর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে এবং দ্বিতীয়টি শিরক পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। বদদীন কপট মুসলিমরা প্রথম অপরাধে লিপ্ত এবং বিদআতপ্রবণ অতিপ্রেমবাদীরা দ্বিতীয় অপরাধে লিপ্ত।
রাসূল সা. বলেছেন,
لا تطرونی کما أطرت النصاری عیسی ابن مریم فإنما أنا عبده فقولوا عبد الله ورسوله٠
“তোমরা আমরা প্রশংসায় অতিরঞ্জন করো না। যেমন খ্রিষ্টানরা ঈসা আ.-এর প্রশংসা করতে গিয়ে অতিরঞ্জন করেছে। জেনে রাখো, আমি হলাম কেবল আল্লাহর বান্দাহই। কাজেই তোমরা আমার পরিচয় দিতে গিয়ে বলবে, তিনি আল্লাহর বান্দাহ ও তাঁর রাসূল।” (বুখারী)
উল্লেখ্য, খ্রিষ্টানরা ঈসা আ.কে বাশারিয়্যাত ও আবদিয়্যাতের স্তর থেকে তোলে উলূহিয়্যাত ও রুবুবিয়্যাতের স্তরে পৌঁছে দেয় এবং তাঁর জন্য আল্লাহ তাআলার সকল গুণ, বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতা সাব্যস্ত করে।
অন্য একটি হাদীসে রাসূল সা. বলেন,
٠٠٠والله ما أحب أن ترفعونی فوق منزلتی التی أنزلنی الله عز وجل٠
“আল্লাহর কসম! আল্লাহ তাআলা আমাকে যে মর্যাদায় সমাসীন করেছেন, তার বাইরে তোমরা আমার মর্যাদা বাড়িয়ে বলবে, তা আমি পছন্দ করি না।” (আহমদ, ইবনু হিব্বান ও অন্যান্য)
আসুন, আমরা নিজেদের ঈমান সুরক্ষার প্রয়োজনে ভেবে দেখি, রাসূল সা.-এর শান ও মর্যাদা বর্ণনার ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু ত্রুটি করছি আর কতটুকু অতিরঞ্জন করছি? আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকেই রাসূল সা.-এর প্রতি যথা্যথ সম্মান প্রদর্শন ও ভালোবাসা নিবেদনের তাওফীক দান করুন! আমীন!