আলিয়া শিক্ষাব্যবস্থার অস্তিত্বসংকট: আশু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা !!

লেখক: ড. আহমদ আলী 

মাদরাসাগুলোর শিক্ষাপরিবেশ, কারিকুলাম-সিলেবাস ও ছাত্র-শিক্ষকদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে যাদের ন্যূনতম অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁরা অন্তত এ বিষয়ে আমার সাথে ঐকমত্য পোষণ করবেন যে, আলিয়া মাদরাসাগুলোতে সামগ্রিকভাবে বর্তমানে পড়ালেখার যে পরিবেশ বিরাজ করছে, সেই অবস্থায় থেকে 

এবং যে কাটছাট, অবিবেচক ও সঙ্গতিহীন কারিকুলাম-সিলেবাস রয়েছে তা অধ্যয়ন করে হয়তো অনেকেই উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ভালো চাকরিও পান; কিন্তু কারো পক্ষে সাধারণত একজন সত্যিকার যোগ্য ও আদর্শ আলিমে রব্বানী হিসেবে গড়ে ওঠা সম্ভব নয়, 

ইল্লা মা শা’আল্লাহ দু/একজন গড়ে ওঠলেও তা একান্তই বিচ্ছিন্ন এবং এর পেছনে বাইরের অন্য উদ্দীপক কাজ করে। আমার জানা মতে, 

[খুবই অল্পসংখ্যক মাদরাসা ব্যতীত] অধিকাংশ মাদরাসায় ইবতেদায়ী, দাখিল ও আলিম স্তরে নিয়মিত ক্লাশ হলেও ফাযিল ও কামিল স্তরে ভর্তি রেজিস্টারে অনেক ছাত্রের নাম থাকে বটে; কিন্তু ক্লাসগুলোতে উপস্থিতির হার একান্তই হতাশাব্যঞ্জক। এমন কিছু প্রসিদ্ধ মাদরাসা সম্পর্কেও আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি, 

যেগুলোতে মাসের পর মাস ফাযিল ও কামিল স্তরে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্লাসই হয় না, ছাত্ররাও ক্লাসে আসে না এবং শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকেই নিয়মিত ক্লাস নিতে খুব একটা আগ্রহীও নন। আবার তাদের মধ্যে অনেক শিক্ষকের মানসম্মত পাঠদানের মতো যোগ্যতারও ভীষণ অভাব রয়েছে। (অবশ্যই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক শিক্ষকের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।)  বড়ো আফসোসের ব্যাপার হলো, 

আমাদের মাদরাসাগুলোর অভিভাবক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং দায়িত্বশীল আলিমগণ শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন, দীনী ঐতিহ্যের হিফাজত ও সত্যিকার আলিম গড়ার উপযোগী কারিকুলাম-সিলেবাস প্রণয়ন ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের পরিবর্তে বরাবরই এমন সকল অবিবেচনাপ্রসূত কাজ করেছেন, যা আলিয়ার সেই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থাকে রীতিমত অস্তিত্বসংকটে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই আলিয়া শিক্ষাব্যবস্থার স্বাতন্ত্র্য ও মৌলিকত্ব_যা যৎসামান্য বাকি আছে তাও ধরে রাখা দূরূহ হবে।

সোর্স: ড. আহমদ আলী স্যারের পেইজ থেকে নেয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
error: Content is protected !!